রবিউল আউয়াল
মাসের ইবাদত এবং এর ফযীলতঃ
রবিউল আউয়াল আরবি চান্দ্র মাসগুলির তৃতীয় মাস। ফযীলত এবং বুজুরগীর দিক দিয়ে
এই মাসের একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। এই মাস রহমত ও বরকতের মাসও বটে। এই মাসের
আগমনের সাথে সাথে আল্লাহ্ তাআলার রহমত ও করুণা অজস্র ধারায় বর্ষিত হতে থাকে। এই
মাসের আগমণে বিশ্বের আঠারো হাজার মাখলুকাত যেমন প্রফুল্ল ও আনন্দিত হয় তেমনি
বিষাদ সাগরেও নিমজ্জিত হয়।
বিভিন্ন কেতাব থেকে জানা যায় যে, এই চান্দ্র মাসের ১২ তারিখে করুণাময়
আল্লাহ্ তাঁয়ালা তাঁর প্রিয় হাবীব, রহ্মাতুল্লিল আ'লামীন, সাইয়্যেদুল আম্বিয়া,
শাফিউল মুজনেবীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতেমুন্নাবিয়্যিন, আহমদ মোজতবা, মোহাম্মদ
মোস্তফা, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এই ধরা পৃষ্ঠে প্রেরণ করে ছিলেন এবং
এই মাসেই উক্ত তারিখে দুনিয়াবাসীকে বিষাদ সাগরে নিমজ্জিত করে আবার তাঁকে স্বীয়
সান্নিধানে ডেকে নিয়ে যান। এই জন্য এই মাসটি যুগপত্ আনন্দ ও বিষাদের মাস। তিনি
এসেছিলেন এই জগতের রহমত স্বরূপ। যেমন আল্লাহ্ তাআ'লা তাঁহার পাক কালামে বলেছেন-
উচ্চারণঃ ওমা
আরছালনাকা ইল্লা রহ্মাতালিল্লিল আলামীন।
অর্থঃ হে নবী!
আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।[সূরা আম্বিয়া ১০৭নং আয়াত।]
বাস্তবিকই তিনি বিশ্ববাসীর রহমত স্বরূপ ছিলেন। তাঁহার প্রতিটি কথাবার্তা, কাজ
কর্ম, চিন্তাভাবনা এমনকি প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল বিশ্ববাসীর জন্য নেয়ামত ও বরকতে
পরিপূর্ণ। সুতরাং এ মাস ভরে দোয়া দরূদ, নফল নামায, কোরআন তেলাওয়াত, গরীব মিসকীন ও
দীন দুঃখীকে দান খয়রাত করা প্রতিটি মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। এ কর্তব্য সম্পাদন
করতে হলে নবী করীম (সাঃ)-এর প্রতি অটল ভক্তি, শ্রদ্ধা ও মহব্বত থাকতে হবে। এ
পরিপ্রেক্ষিতে নবী (সাঃ) এরশাদ করেছেন-"যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসল সে যেন
আল্লাহ্কে ভালবাসল।
অর্থাৎ নবী করীম (সাঃ)-এর মহব্বতের মাধ্যমেই আল্লাহ্ তাআ'লার
মহব্বত লাভ করা যায়। তাই দেখা যায়, একজনের মহব্বতের সাথে আর একজনের মহব্বত
ওতপ্রতোভাবে জড়িত! নবী করীম (সাঃ) নিজেকে বলেছেনঃ "আনা বাশারুম মিছলুকুম"
[সূরা কাহাফের ১১০নং আয়াতাংশ] আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। তাই শুধু এতটুকু বলাই
আমাদের পক্ষে যথেষ্ট যে, নবী করীম (সাঃ) কে মহব্বতের অর্থই হচ্ছে-মো'মীন মুসলমানের
জীবনের সর্বোক্ষেত্রে নবী পাক (সাঃ) এর শির মোবারক থেকে কদম মোবারক পর্যন্ত
তরীকাকে আন্তরিক ভক্তি, শ্রদ্ধা ও মহব্বতের সাথে আঁকড়ে ধরা। কোন অবস্থাতেই
সুন্নতের খেলাফ না করা। সুতরাং সংক্ষেপে বলা চলে, কাজে, কথায়, চলন-বলনে, চিন্তা
ভাবনায় তথা জীবনের সর্বোস্তরে সুন্নত তরীকা অনুসরণ করলেই নবী করীম (সাঃ)-এর
সত্যিকার উম্মতের দাবীদার হওয়া যাবে এবং তাঁর খাঁটি উম্মত বলে পরিগণিত হবে;
অন্যথায় সব কর্মকাণ্ড বৃথা যাবে।
************************